পঞ্চদশ প্রবাসী ভারতীয় দিবস

মহা ধুমধামে পঞ্চদশ ভারতীয় দিবস বারানসীতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রভিন্দ জগনাথ এ বছরের সম্মেলনের প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি মূল ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি উদ্বোধনী ভাষণে বলেন এই অনুষ্ঠান বিশ্বের সকল ভারতীয়দের মধ্যে যোগসূত্র। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভুত লোকেদের ভারতের ব্যান্ড এ্যাম্বাসাডর বলে বর্ণনা করেন এবং তাদের দেশকে গৌরবান্বিত করা জন্য তাদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভুত লোকেদের উচিত পূর্বপুরুষের মাতৃভূমির সঙ্গে সংযুক্ত থাকা।

যদিও বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের অবদানের স্বীকৃতি হিসেব প্রবাসী ভারতীয় দিবস প্রতি বছর ৯ জানুয়ারী উদযাপিত হয় কিন্তু এবার প্রবাসী ভারতীয়দের প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলা দেখার সুযোগ করে দিতে দিন বদলানো হয়েছে। প্রতিনিধিরা নতুন দিল্লীতে ২৬শে জানুয়ারীর কুচকাওয়াজ দেখারও সুযোগ পাবেন।

মহান প্রবাসী হিসেবে বিবেচিত মহাত্মা গান্ধী ১৯১৫ সালের ৯ জানুয়ারী দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন। সেই কারণেই ৯ই জানুয়ারী প্রবাসী ভারতীয় দিবস। উত্তর প্রদেশ সরকারের অংশীদারিত্বে পঞ্চদশ প্রভাসী ভারতীয় দিবস আয়োজিত হয়।

২০০৩ থেকে প্রবাসী ভারতীয় দিবস উদযাপিত হচ্ছে, তবে এখন প্রতি দুবছর অন্তর এটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সম্মেলন প্রবাসী ভারতীয়দের তাদের পিতৃভূমির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগের এক মঞ্চ হিসেবে কাজ করে। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারে। এবারের সম্মেলনে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নিচ্ছে। সম্মেলনে ভারতের বিকাশে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য অসাধারণ মেধার প্রবাসীদের প্রবাসী ভারতীয় সম্মান প্রদনা করা হয়।

ভারতীয় বংশোদ্ভুত খ্যাতনামা জাতীয় নেতাদের মুখ্য অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়, সেই কারণেই পঞ্চদশ প্রবাসী ভারতীয় সম্মেলনে মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রভিন্দ জগনাথকে এই সম্মান দেওয়া হয়। ভারতীয় বংশোদ্ভুত অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তাদের গ্রহণ করা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হয়েছেন।

অনুষ্ঠানের প্রথম দিন প্রবাসী যুবাদের জন্য উৎসর্গ করা হয়। নরওয়ের সংসদ সদস্য শ্রী হিমানশু গুলাটি এবং নিউজিল্যান্ডের সংসদ সদস্য শ্রী কমলজিৎ বক্সী এই যুবাদের মধ্যে অন্যতম। সম্মেলনের প্রথম দিনে ২১শে জানুয়ারী প্রবাসী ভারতীয় দিবসের যুবা অধিবেশনে তাঁরা প্রধান অতিথি ছিলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজ যুবা প্রবাসী ভারতীয় দিবসের উদ্বোধন করেন। কয়েক শতাব্দী আগে প্রবাসী ভারতীয়রা ফিজি, মরিশাস, সুরিনাম, শ্রীলংকা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, গায়ানা, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে যেতে শুরু করে। বিংশ শতাব্দীতে আর একবার শিক্ষিত, উচ্চ দক্ষতা সম্পন্য এবং প্রাণশক্তিতে ভরপুর যুব সম্প্রদায়ের অন্যত্র গমন দেশকে গৌরবান্বিত করে। বর্তমানে প্রবাসী ভারতীয়রা ভারতীয় অর্থনীতিতে অভুতপূর্ব অবদান যোগাচ্ছে। প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আধ্যাত্মিক মাতৃভূমির প্রতি তাদের অবদানকে ভারত স্বীকৃতি দিচ্ছে।(মূল রচনাঃ রঞ্জিত কুমার)